ভাণ্ডারিয়ায় একই পরিবারের চার সদস্যদের অজ্ঞান করে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীকে অপহরন




পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় দিলীপ চন্দ্র রায় (৬০), স্ত্রী ছবি রানী (৫০), বড় ছেলে তাপস চন্দ্র রায় (২০), ছোট ছেলে অপূর্ব চন্দ্র রায় (১৪) একই পরিবারের চার সদস্যকে অজ্ঞান করে নাবালিকাকে অপহরন করে উধাও একই ওয়ার্ডের বখাটে সাইফুল। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে।

স্থানীয়, ভূক্তভোগীদের স্বজন, হাসপাতাল ও থানা পুলিশসূত্রে জানাগেছে,  ভাণ্ডারিয়ার ৪নম্বর ইকড়ি ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্থানীয় ইকড়ি বাজারের মুদি ব্যবসায়ী দিলীপ চন্দ্র রায় প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার রাতেও দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যায়। রাতে  পরিবারের দস্যদের নিয়ে খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। এদিকে প্রায় ৫/৬মাস যাবৎ একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইয়াকুব হাওলাদারের বখাটে ছেলে সাইফুল হাওলাদার (১৯) স্থানীয় ইকড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাবালিকাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। নাবালিকা তা নামায় তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বপরিবারে হত্যা করে হলেও তাকে (নাবালিকাকে) নিয়ে যাবে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তারই ধারাবাহিকতায় এক পর্যায়ে ঐ নাবালিকার সহযোগিতায় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে শনিবার রাতে খাবারের সাথে অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খাইয়ে নাবালিকাকে সহ ঘরের স্টীলের আলমিরা ভেঙ্গে ৭/৮ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা সহ প্রায় ১০লাখ টাকা সাথে নিয়ে উধাও হয় সাইফুল।



এদিকে রবিবার (২২মে) সকাল ৯/১০টার সময়েও ঐ ঘরের লোকজনের কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে স্থানীয়রা গিয়ে দেখেন তারা গভীরঘুমে অচেতন। ডাকা ডাকিতে কোন সাড়া না পেয়ে স্থানীয়রা একজন পল্লী চিকিসৎককে নিয়ে স্যালাইন পুষ করে তাতেও অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। ঘটনা জানতে পেরে পাথরঘাটার এক স্বজন কমল কৃষ্ম হালদার দুপুর আনুমানিক দের টার দিকে ঐ বাড়িতে এসে পৌঁছে তাদের ভাণ্ডারিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। এতে প্রাথমিক চিকিৎসার প্রায় ঘন্টা খানেক পর দিলীপ চন্দ্র রায় একটু কথা বলতে পারে । এসময় অপেক্ষমান বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা তার সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে জানা যায় এ ঘটনা। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ছবি রানী সহ অন্যরা অচেতন রয়েছে। 

এ বিষয়ে জানার চেষ্টা করলে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই হাওলাদার ফোন রিসিভ করেনি। এবং সাইফুল উধাও হলেও তার পরিবারের সদস্যরাও এ বিষয়ে জানেনা বলে জানান স্থানীয়রা।

অন্যদিকে এ ঘটনায় ভাণ্ডারিয়া উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টাণ ্ঐক্য পরিষদ,পূ জা উদ্যাপন পরিষদের জেষ্ঠ্য নেতারা হাসপাতালে যান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে মুঠো ফোনে বিষয়টি অবহিত করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমা রানী ধর জানান, পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভায় রয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলবেন। এবিষয়ে ভাণ্ডারিয়া থানার অফিসার্স ইন চার্জ মো. মাসুমুর রহমান বিশ্বাস জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। নাবালিকাকে  উদ্ধারের তৎপরতা চলছে এবং মামলা প্রক্রীয়াধীন।

বিকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দিলীপ চন্দ্র রায় একটু সুস্থ্য হলেও বাকিরা অচেতন এবং বখাটে সাইফুলের প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা।


Comments